October 25, 2024, 6:31 pm

সংবাদ শিরোনাম :
ডেঙ্গু প্রতিরোধে দক্ষিণ খান বিএনপি’র ভিন্ন রকম ক্যাম্পেন  শেখ হাসিনাকে ৫৭ বার ফাঁসি দিলেও ক্ষতি পূরণ হবে না: সেলিম উদ্দিন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আ’লীগ নেতাসহ ৯ জনের সদস্যপদ বাতিল পাইকগাছায় ঘুর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে অসহায় দিনমজুর সহিলের মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ফেলেছে খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন সাবেক কমিশনার হারুনের দাপটে বসত ভিটে ছড়া এক দম্পতি   খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত

উওরার উত্তরখানে জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূল হোতা শাহজাদাসহ আটক-৩ : বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্বার ।

দূর্নীতি রিপোর্টঃ রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকা থেকে জালনোট প্রস্তুতকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা শাহজাদাসহ তিন জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

এসময় তাদের নিকট থেকে বিপুল পরিমান জালনোট তৈরির মেশিন, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ও প্রস্তুতকৃত জাল টাকা উদ্বার করে  র‌্যাব-৩।

র‌্যাব জানিয়েছে, এ চক্রের অন্যতম মূলহোতা মোঃ শাহজাদা আলম (৩৩), মোঃ মাহেদী হাসান (১৯), আবু হুরায়রা ওরফে  তুষার (২২)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

আজ মঙ্গলবার  দুপুর ১২ টায় র‌্যাব-৩, টিকাটুলি কার্যালয় অনুষ্টিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, গতকাল সোমবার রাতে  র‌্যাব-৩ এর একটি  দল রাজধানীর উত্তরখান থানার উজাপাড়া (মাস্টারপাড়া) এলাকায় গোপনে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে জালনোট প্রস্তুতকারী সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতা মোঃ শাহজাদা আলম (৩৩), মোঃ মাহেদী হাসান (১৯), আবু হুরায়রা ওরফে  তুষার (২২)কে আটক করতে সক্ষম হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে ৯০০টি ২০০ টাকার জালনোট এবং ২০০টি ১০০ টাকার জালনোট মিলিয়ে সর্বমোট ২ লক্ষ জালটাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৩ এর এ কর্মকর্তা জানান,  এছাড়া তাদের কাছ থেকে জালনোট প্রস্তুতের কাজে ব্যবহৃত ১ টি ল্যাপটপ, ১ টি ল্যাপটপ ব্যাগ, ১ টি কিবোর্ড, ২ টি মাউস, ২ টি ল্যাপটপ চার্জার, ১ টি পেনড্রাইভ, ১০ টি বিশেষ মার্কার পেন, টাকা ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত ১ টি লেজার সহ ১৩০ প্রিন্টার ও ১টি লেজারসহ ২০০ প্রিন্টার, টাকার ডিজাইন প্রিন্ট করার জন্য ৪ টি টোনার কার্টিজ, ২ রিম সাদা কাগজ, ১ টি ফয়েল পেপার রোল, ৩ টি স্টিলের স্কেল, ৩ টি এন্টি কাটার, ১ টি কাঁচি, ৪ টি মোবাইল, ৮ টি সীমকার্ড, ১ টি এনআইডি কার্ড, ৩ টি মানিব্যাগ এবং নগদ ৩০৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানিয়েছে, এচক্রটি  (তারা) স্টীলের স্কেল এবং এন্টিকাটার এর সাহায্যে জালনোট গুলো কেটে বান্ডেল করে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করে।  তারা সূক্ষভাবে সম্পন্ন করতে  বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের কাগজ ব্যবহার করে সবশেষ লিপি গোল্ডকে বেছে নেয়। এভাবে ৫০ টি নোটের একটি বান্ডেল তৈরিতে তাদের আনুমানিক ২০০ টাকা খরচ হয় অর্থাৎ ১ লক্ষ টাকা তৈরিতে আনুমানিক খরচ হয় ২ হাজারবটাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত শাহজাদা, মাহেদী এবং তুষার মিলে বিগত ৬ মাস যাবৎ জালটাকার ব্যবসা করার লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করে। আটক মাহেদী পূর্ব থেকেই ফটোশপ এবং গ্রাফিক্সের ছোটখাট কাজ জানত। সেই সুত্রকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউব থেকে জাল টাকা বানানোর প্রক্রিয়া দেখে এবং ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত হওয়া দুই বন্ধু শাহজাদা ও তুষারের সহযোগিতায় জালটাকা তৈরির কাজ শুরু করে।

আটককৃতরা র‌্যাবকে জানান,  শাহজাদা এবং তুষার দীর্ঘদিন ধরেই জালটাকা কেনাবেচার কাজ করে আসছিল। পরবর্তীতে মাহেদীকে সঙ্গে নিয়ে তারা এবার জালটাকা বানানোর কাজ শুরু করে আসছিল বলে স্বীকার করেছেন।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, এসব তৈরিকৃত জালনোট গুলো বিক্রয়ের জন্য শাহজাদা এবং তুষার মিলে ফেসবুকে জালটাকা ক্রয়-বিক্রয়ের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপের (যেমন; এ গ্রেড জালনোট, টাকা চাই, জালনোট, জালটাকা বিক্রি করি, জাল টাকার ডিলার, জাল টাকা বিক্রয় কেন্দ্র, রিয়েল সেলস্, টাকা বিজনেস ইত্যাদি) পোস্টে জালটাকা ক্রয়ে আগ্রহী কমেন্টকারীদের সাথে ইনবক্সে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে তারা ফোনে যোগাযোগ করে সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে জালটাকা ডেলিভারির কাজ করে থাকে। এ চক্রটি বিগত সময়ে জালটাকার বড় ধরনের ৪ টি ডেলিভারি দিয়েছে বলে জানায়।

তিনি আরো জানান, গত ১৫ জুন ২০২৩ তারিখ তারা এ গ্রেড জালনোট গ্রুপের মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ টাকার (৫০০, ২০০ ও ১০০ টাকার নোট) জালনোটের একটি ডেলিভারি দেয় যার বিনিময় মূল্য হিসেবে ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া  ১৯ জুন, ২০২৩ তারিখ দুই লক্ষ টাকার জালনোট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতিকালীন টাকা এবং মেশিন ও সরঞ্জামাদিসহ র‌্যাবের কাছে হাতেনাতে ধরা পরে।

র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার জানান,  গ্রেফতারকৃত শাহজাদা এই সংঘবদ্ধ  চক্রের মূলহোতা। সে পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া থানা এলাকার বোচাগছ গ্রামের মইনুল হকের পুত্র। শাহজাদা  তুষারকে নিয়ে  জালটাকা প্রস্তুতের এই চক্রটি গড়ে তোলে। সেসময় থেকে মাহেদী এবং তুষারকে সে তার উত্তরখানের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে। এখান থেকেই তারা তাদের চক্রের পরবর্তী কার্যক্রম চালাতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ভয়ে এরা সাম্প্রতিক সময়ে ওই বাসা ছেড়ে গাজীপুরে আরেকটি ভাড়া বাসায় চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল।

আজ দুপুরে র‌্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) ফারজানা হক জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন